রামচন্দ্র এবং শ্রীকৃষ্ণ কি নিরামিষ খেতেন, শাস্ত্র কী বলে ?

0

রামচন্দ্র এবং শ্রীকৃষ্ণ কি নিরামিষ খেতেন, শাস্ত্র কী বলে ?

রামচন্দ্র এবং শ্রীকৃষ্ণ কি নিরামিষ খেতেন, শাস্ত্র কী বলে ?

গীতার ৯/২৭ নং শ্লোকে বলা আছে, তুমি যা কিছু আহার করবে তা আমাকে নিবেদন করে করবে। এ থেকেই স্পষ্ট যে মানুষ- আমিষ, না নিরামিষ আহার করবে, সে ব্যাপারে গীতার কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। এজন্য মানুষকে নিরামিষ বা আমিষ আহারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাম ও শ্রীকৃষ্ণের জীবনী থেকে। এখানে আমি প্রথমে রামায়ণ থেকে বিষয়টি আলোচনা করছি-

সংস্কৃত রামায়ণ অনুসারে রাম-সীতা, লক্ষ্মণের মাংস খাওয়ার প্রমাণ :

অযোধ্যাকাণ্ডের ১৪ নং উপাখ্যান (শৃঙ্গবেরপুর- নিষাদরাজ গৃহ) সর্গ : ৪৯-৫২ তে এক জায়গায় রাম তার পিতার প্রধানমন্ত্রী সুমন্ত্র, যে রামকে বনে ছাড়তে গিয়েছিলো, তাকে বলছে, “আবার আমি কবে পিতা মাতার সঙ্গে মিলিত হয়ে সরযুতটের পুষ্পিত বনে মৃগয়া করবো ?” (রাজশেখর বসুর রামায়ণ, পৃষ্ঠা ১০৬)

যারা জানেন না, তাদের জন্য বলছি- মৃগয়া মানে শিকার কর, আর এই শব্দটি এসেছে মৃগ থেকে যার অর্থ হরিণ। প্রাচীন কালের রাজারা শুধু হরিণকেই শিকার করতো, তাই হরিণের প্রতিশব্দ মৃগ থেকে মৃগয়া শব্দের উৎপত্তি। আর রাজারা অন্যান্য হিংস্র প্রাণী বীরত্ব দেখানোর জন্য শিকার করলেও তৃণভোজী প্রাণী কিন্তু শিকার করতো শুধু মাত্র খাওয়ার উদ্দেশ্যে। তাহলে রামের মৃগয়া করার উদ্দেশ্যটা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন ? না পারলেও একটু পরেই সেটা আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। কা্রণ, এই উপাখ্যানেরই শেষের দিকে, উল্লিখিত পুস্তকের পৃষ্ঠা ১০৯ তে, সীতা গঙ্গার কাছে প্রার্থনা করে বলছে, আমরা যদি ঠিকঠাক মতো বনবাস শেষ করে রাজ্যে ফিরে যেতে পারি, তাহলে, “তোমাকে সহস্র ঘট সূরা এবং মাংসযুক্ত অন্নের ভোগ দেবো।”

যে মাংস খায় না, তার পক্ষে কি মাংসের ভোগ দেওয়া সম্ভব ?
এই পৃষ্ঠাতেই এই উপাখ্যানের একেবারে শেষ অনুচ্ছেদে বলা আছে,
“কিছুকক্ষণ পর তারা সমৃদ্ধ শস্যসম্পন্ন বৎস্যদেশে উপস্থিত হলেন। সেখানে রাম লক্ষ্মণ- বরাহ (শুকর), ঋষ্য, পৃষত (কৃষ্ণসার হরিণ) এবং মহারুরু (শম্বর, এটা আমার অচেনা) এই চার প্রকার পশু বধ করে, তাদের পবিত্র মাংস নিয়ে ক্ষুধিত হয়ে সায়ংকালে বাসের নিমিত্তে বনে প্রবেশ করলেন।”
রাম-লক্ষ্মণ-সীতা যদি মাংসই না খায়, তাহলে তারা এই পশুগুলো হত্যা করলো কেনো ?
এরপর অযোধ্যাকাণ্ডের ১৫ নং উপাখ্যান, উক্ত পুস্তকের পৃষ্ঠা নং ১১১ তে বলা আছে, “এক ক্রোশ গিয়ে দুই ভ্রাতা বহু প্রকার পবিত্র মৃগ বধ করে এনে যমুনা তীরস্থ বনে ভোজন করলেন।”
এবং পৃষ্ঠা ১১২ তে বলা আছে- রাম, লক্ষ্মণকে বলছে,
“অতএব তুমি মৃগ বধ কর নিয়ে এসো। লক্ষ্মণ পবিত্র মৃগ বধ করে এনে তার মাংস অগ্নিপক্ব ও শোনিত শূন্য করে রামকে দিলেন।”

শুধু যে রাম লক্ষ্মণ সীতা ই মাংস খেতো, তাই নয়, খেতো ভরতও, তার প্রমান আছে, পৃষ্ঠা ১২৯ এ; সেখানে, রামের সাথে দেখা করে তাকে রাজ্যে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ভরত বনের মধ্যে এলে, গুহ নামক একব্যক্তির জনপদের কাছে ভরত শিবির ফেলে বিশ্রামের জন্য, খবর এবং পরিচয় পেয়ে সেই গুহ, মৎস্য-মাংস-মধু উপহার নিয়ে ভরতের সাথ দেখা করতে যায়।
সেগুলো যদি না খাওয়া হয়, তাহলে সেগুলো উপহার নিয়ে যাবে কেনো ?
গুহ এর ওখান থেকে ভরত যায় ঋষি ভরদ্বাজের আশ্রমে, সেখান ভরতের সাথের সকল সৈন্যসামন্তকে বলা হয়, “সূরাপায়িগন সূরা পান করো, বুভূক্ষিতগণ পায়স ও সুসংস্কৃত মাংস যা ইচ্ছা হয় খাও”(পৃষ্ঠা-১৩২)।অনেক কিছুর সাথে এখানে ভরতের লোকজনের আপ্যায়ণের জন্য ছিলো- ছাগ ও বরাহের মাংস, মৃগ, ময়ূর ও কুক্কুটের(মুরগী) মাংস (পৃষ্ঠা-১৩৩)। এই তথ্যে এখানে পরিষ্কার যে, সেকালে ঋষিরাও মাংস খেতো, কেউ নিরামিষ ভোজী ছিলো না।
এরপর অরণ্যকাণ্ডের ১১ নং উপাখ্যান “মায়া মৃগ ও মারীচ বধ”, যে উপাখ্যানের ঘটনায় একটি সুন্দর হরিণ দেখে সীতা রামকে সেই হরিণ ধরে আনার জন্য বলেছিলো, সেই হরিণ ছিলো আসলেই একটি মায়া হরিণ, কিন্তু প্রচলিত ধারণা মতো সোনার হরিণ নয়, রামকে বিভ্রান্ত করার জন্য মারীচ এই হরিণের রূপ ধরেছিলো। যা হোক, এই উপাখ্যানের শেষে বলা আছে, শেষ পর্যন্ত সেই মায়া হরিণকে না পেয়ে “রাম অন্য মৃগ বধ করে মাংস নিয়ে আশ্রমের দিকে চললেন (পৃষ্ঠা-১৭৮)।”

রাম সীতা যদি মাংসই না খায়, তাহলে রাম, সীতার সেই পছন্দের হরিণকে ধরতে না পেরে অন্য হরিণ বধ করলো কেনো ?
শুধু তাই নয়, রাবন যখন সীতাকে অপহরণ করতে ছদ্মবেশে গেছে, তখন রাবনকে সীতা চিনতে না পেরে বলছে,
“আপনি একটু বিশ্রাম করুন, আমার স্বামী শীঘ্রই রুরু (হরিণ), গোধা (গোসাপ) বরাহ প্রভূতি পশু বধ করে নিয়ে আসবেন।”(পৃষ্ঠা-১৮২)
রাম সীতা যদি মাংসই না খায় তাহলে রাম এই পশুগুলো শিকার করবে কেনো এবং কেনো সীতা, একজন অতিথিকে মাংস খাওয়ানোর কথা বলবে ?
এরপর সুন্দরকাণ্ডের ৭ নং উপাখ্যান, ‘সীতা হনুমান সংবাদ’ এ, হনুমান, সীতাকে খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে রামের কী অবস্থা সেটা তাকে বোঝানোর জন্য বলছে, “তিনি মাংস খান না, মধু পান করেন না, কেবল বিহিত বন্য ফলমুল খান।” (পৃষ্ঠা-২৭৭)
সীতার শোকে রাম যে মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে সেই কথা ই হনুমান এখানে সীতাকে বোঝাচ্ছে।
আশা করছি, রাম-সীতা যে নিরামিষভোজী ছিলো না, সেই বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার হয়েছে। তারপরও যদি দিব্যজ্ঞানীদের মতো আপনার এই ধারণা থাকে যে- না, রাম সীতার পক্ষে মাংস খাওয়া অসম্ভব। তাহলে রাজশেখর বসুর অনুবাদ করা এই রামায়ণটি আপনাকে কালেক্ট করে পড়তে হবে। কেউ কেউ এই প্রশ্নও তুলতে পারেন যে, রাজশেখর বসুই যে রামায়ণের সঠিক অনুবাদ করেছে, তার নিশ্চয়তা কী ? তাহলে তো আপনাকে এটা পড়তেই হবে। কারণ, পড়ার পরই আপনি বুঝতে পারবেন, অনুবাদ কী এবং অনুবাদ করা কাকে বলে ?
এবার নিচের প্রবন্ধ থেকে দেখে নিন শ্রীকৃষ্ণ আসলে নিরামিষ খেতেন কি না ?

মহাভারত যুগের খাদ্যাভ্যাস :

বৈষ্ণব সমাজের বহুল মিথ্যা প্রচারণার ফলে প্রায় সব হিন্দুই বিশ্বাস করে যে, ধর্ম কর্ম করতে হলে নিরামিষ খেতে হবে বা মাছ মাংস খেলে ধর্ম কর্ম হবে না বা ধর্ম কর্ম করা যাবে না। কিন্তু আল্টিমেট বিচারে নিরঙ্কুশ নিরামিষ খাওয়া যেহেতু একটি অবাস্তব থিয়োরি, সেহেতু কোনো গৃহী হিন্দুর পক্ষেই সম্পূর্ণ নিরামিষী হওয়া সম্ভব নয়, তাই তারা বাস্তব কারণেই মাছ মাংস খেতে বাধ্য হয় এবং পূজা পার্বন উপলক্ষ্যে বা একাদশীর উপবাস উপলক্ষ্যে দুই একদিন নিরামিষ খেয়ে ভণ্ডামী করে, পরে আবার মাছ মাংস খায় এবং অপরাধবোধে ভোগে; এভাবে বৈষ্ণব সমাজ, পুরো হিন্দু সমাজকে একটি দ্বিধা-সংকোচের মধ্যে ফেলে রেখেছে।
হিন্দু শাস্ত্রে যে নিরামিষ খাওয়ার কোনো বিধান নেই, এই কথা আমি আমার বহু পোস্টে বহুবার বলেছি, শাস্ত্র থেকে তার প্রমাণও দিয়েছি, রামায়ণ ঘেঁটেও দেখিয়েছি রাম-সীতা-লক্ষ্মণ, বনবাসকালে বনে পশু শিকার করে তার মাংস খেতো, কিন্তু তারপরও কিছু দিব্যজ্ঞানীর মাথায় এটা ঢোকেই না, তারা হিন্দু জাতিকে নিরামিষই খাওয়াবে, আর মুসলমানদের হাতে হিন্দুদের ধন-সম্পদ ঘর বাড়ি আর নারী তুলে দেওয়াবে।

গীতায় বর্ণিত সাত্ত্বিক মানে যে নিরামিষ খাবার নয় এবং রামায়ণেও যে নিরামিষ খাবারের কোনো ব্যাপার নেই, এসব ব্যাপারে আগে আমি আলোচনা করেছি; প্রসঙ্গ উপস্থিত হওয়ায়, আজ আলোচনা করে দেখাচ্ছি মহাভারত যুগের খাদ্যাভ্যাসের বিষয়ে-
মহর্ষি কৃষ্ণদ্বৈপায়ণ ব্যাসকৃত মহাভারতের গদ্য অনুবাদক রাজ শেখর বসু, তার গ্রন্থের ভূমিকায় বলেছেন, "ভীম মাংসলোভী পেটুক ছিলেন", সুতরাং ভীমের অন্যান্য ভাই যে মাংস খেতো এবং রাজ পরিবারে যে মাংস রান্না হতো, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
এছাড়াও হস্তিনাপুরের রাজ মাতা সত্যবতী ছিলেন জেলের মেয়ে, আর জেলের মেয়ে যে মাছ খাবে, সেটা তো নরম্যাল ব্যাপার।
মহাভারতের সভাপর্বের "ধৃতরাষ্ট্র-শকুনি-দুর্যোধন-সংবাদ" অধ্যায়ে ধৃতরাষ্ট্র, দুর্যোধনকে বলছে-
"পুত্র, তোমার শোকের কারণ কী? মহৎ ঐশ্বর্য আর রাজচ্ছত্র তোমাকে আমি দিয়েছি, তোমার ভ্রাতা আর বন্ধুরা তোমার অহিত করেন না, তুমি উত্তম বসন পরছো, সমাংস অন্ন খাচ্ছো, উৎকৃষ্ট অশ্ব, মহার্ঘ শয্যা মনোরমা নারীবৃন্দ, উত্তম বাসগৃহ ও বিহারস্থানও তোমার আছে, তবে তুমি দীনের ন্যায় শোক করছো কেনো ?"

এখানে খেয়াল করুন, ধৃতরাষ্ট্র, দুর্যোধনকে বলছে- "সমাংস অন্ন খাচ্ছো", তার মানে হস্তিনাপুরের রাজ পরিবারে মাংস খাওয়া ছিলো সাধারণ বিষয়।

বনপর্বে "যুধিষ্ঠিরাদির তীর্থযাত্রা" অধ্যায়ে বলা আছে-
"উপস্থিত সকল লোককে যুধিষ্ঠির বললেন, ' যে ব্রাহ্মণ ও যতিগণ ভিক্ষাভোজী, যারা ক্ষুধা তৃষ্ণা পথশ্রম আর শীতের কষ্ট সইতে পারেন না, তাঁরা নিবৃত্ত হন, যারা মিষ্টভোজী, বিবিধ পক্বান্ন লেহ্য পেয় মাংস প্রভৃতি খেতে চান, যাঁরা পাচকের পেছনে থাকেন, তাঁরাও আমার সঙ্গে যাবেন না।"
খেয়াল করুন, যুধিষ্ঠির বলছে, "বিবিধ পক্বান্ন লেহ্য পেয় মাংস প্রভৃতি যারা খেতে চান", এর মানে হলো মহাভারতের যুগে মাংস খাওয়া কোনো ব্যাপারই ছিলো না।
যা হোক, উপরে বর্ণিত এই ধরণের ছোটখাটো ঘটনা ছাড়াও মহাভারতে বর্ণিত দুটি বড় ঘটনার দিকে তাকালে মহাভারত যুগের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে আমরা কিছু ধারণা পাবো।
মহাভারতের সভাপর্ব, যে পর্বে যুধিষ্ঠির, ইন্দ্রপ্রস্থে রাজত্ব করা কালে রাজসূয় যজ্ঞ করেছিলো, সেই সময়ের খাবার দাবারের বর্ণনাতে বলা হয়েছে-
"যুধিষ্ঠির ঘৃত ও মধু মিশ্রিত পায়স, ফলমূল, বরাহ ও হরিণের মাংস, তিল মিশ্রিত অন্ন প্রভূতি বিবিধ ভোজ্য দিয়ে দশ হাজার ব্রাহ্মণ ভোজন করালেন এবং তাদের উত্তম বসন, মাল্য ও বহু সহস্র গাভী দান করলেন। তারপর গীত বাদ্য সহকারে দেবপূজা ও বিগ্রহ স্থাপন করে সভায় প্রবেশ করলেন।… নানাদেশ থেকে আগত ঋষি ও নৃপতিদের সঙ্গে পাণ্ডবগণ সেই সভায় আনন্দে বাস করতে লাগলেন।"
এখানে লক্ষ্যণীয় যে ঋষিরাও কিন্তু বরাহ ও হরিণের মাংস খেতো।

এটা ছাড়াও খাবার-দাবারের আরেকটি বর্ণনা আছে মৎস্য দেশের রাজা বিরাটের কন্যা উত্তরার সাথে অর্জুনের পুত্র অভিমন্যুর বিবাহের ঘটনায়, সেখানকার বর্ণনা এরকম-
"অর্জুনের প্রস্তাবে বিরাট সম্মত হলেন, যুধিষ্ঠিরও অনুমোদন করলেন। তারপর সকলে বিরাটরাজ্যের অন্তর্গত উপপ্লব্য নগরে গেলেন এবং আত্মীয় স্বজনকে নিমন্ত্রণ করে পাঠালেন। দ্বারকা থেকে কৃষ্ণ বলরাম কৃতবর্মা ও সাত্যকি, সুভদ্রা ও অভিমন্যুকে নিয়ে এলেন। ইন্দ্রসেন প্রভূতি ভৃত্যরাও পাণ্ডবদের রথ নিয়ে এল। এক অক্ষৌহিনী সৈন্যসহ দ্রুপদ রাজা, দ্রৌপদীর পঞ্চপুত্র, শিখণ্ডী ও ধৃষ্টদ্যুম্নও এলেন। মহাসমারোহে বিবাহের উৎসব অনুষ্ঠিত হলো। শত শত মৃগ ও অন্যান্য পশু নিহত হলো।.. জনার্দন কৃষ্ণের সম্মুখে অভিমন্যু ও উত্তরার বিবাহ যথাবিধি সম্পন্ন হলো।"
এই দুটি ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে মহাভারত যুগের মানুষের খাদ্যাভ্যাস কেমন ছিলো এবং সেই সাথে এটাও প্রমাণিত যে সেই সময় নিরামিষ খাবার বলে কিছু ছিলো না; আর সেই সাথে এটাও স্পষ্ট যে- উপরে বর্ণিত দুটি বড় ঘটনায় যেহেতু কৃষ্ণ উপস্থিত ছিলেন সেহেতু তিনিও সকলের মতো সকলের সাথে একই ধরণের খাবার খেয়েছেন, সুতরাং কৃষ্ণ নিরামিষ খান নি, তিনিও সকলের মতো আমিষ খাবারও খেয়েছেন। শুধু তাই নয়, কৃষ্ণ যে বনে পশু শিকারও করেছেন সেটাও আছে মহাভারতের আদি পর্বের সুভদ্রাহরণপর্বাধ্যায়ে, সেখানে বলা আছে,

"সৈন্যদল বেষ্টিত হয়ে যদুবীরগণের সঙ্গে কৃষ্ণ বলরাম নানাবিধ মহার্ঘ যৌতুক নিয়ে ইন্দ্রপ্রস্থে এলেন। অনেক দিন আনন্দ যাপন করে সকলে ফিরে গেলেন, কেবল কৃষ্ণ রইলেন। তিনি যমুনা তীরে অর্জুনের সঙ্গে মৃগয়া করে মৃগ বরাহ মারতে লাগলেন।"
সুতরাং কৃষ্ণ যে অহিংস নয়, সেটা তার জীবনের নানা ঘটনায় যেমন প্রমাণিত, তেমনি কৃষ্ণ যে নিরামিষী ছিলেন না, সেটাও মহাভারত যুগের খাদ্যাভ্যাস দ্বারা প্রমাণিত; অথচ এই কৃষ্ণকে ভোগ নিবেদন প্রসঙ্গে দিব্যজ্ঞানীরা প্রশ্ন করে- ভগবানকে কি মাছ মাংস নিবেদন করা সম্ভব ?
ভগবানকে মাছ মাংস নিবেদন করা সম্ভব কি না, আশা করছি সেই প্রশ্নের জবাব আপনি পেয়েছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top