রাধাষ্টমী ব্রত পালনের নিয়মাবলী

0
রাধাষ্টমী ব্রত পালনের নিয়মাবলী
 

রাধাষ্টমী ব্রত পালনের নিয়ম

রাধাষ্টমীর আগের দিন সংযমের সাথে, রাত ১২ টার আগে প্রসাদ খেতে হবে, ঘুমানোর আগে ভালো মতো মুখ পরিস্কার বা ব্রাশ করে ঘুমাতে হবে । ব্রতপালনের দিন রাত ১২ টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২ পর্যন্ত উপবাস । সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে, 'হরিনাম' জপ করা, 'হরিনাম' কীর্তন করা, রাধারাণীর মহিমা শ্রবন করা এবং ১১.৩০ মিনিটে অভিষেক দর্শন করা কর্তব্য । অনেকে এই উপলক্ষ্যে বিশেষ পূজা করে থাকে । চেষ্টা করতে হবে সেই পূজা দুপুর ১২ টার আগে যেনো শেষ হয়, পরে সবাই প্রসাদ খেতে পারবে । কেউ কুসংস্কারের মধ্যে পড়বে না আশাকরি, কারণ শ্রীমতী রাধারানী দিনে আবির্ভাব হয়েছেন । তাই দুপুর ১২ পর্যন্ত উপবাস ।

কেউ যদি ভুল করে শ্রীকৃষ্ণষ্টমী পালন না করে থাকে, কিন্তু রাধাষ্টমী পালন করতে পারবে । কেউ কেউ বলে যে কৃষ্ণষ্টমী ব্রত পালন না করলে রাধাষ্টমী পালন করা যায় না। এটা সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন । সবাই উপবাস পালন করে রাধারানীর বিশেষ কৃপা লাভ করার চেষ্টা করি। আর একে অন্যের জন্য প্রার্থনা করি ।

পদ্মপুরাণে শ্রীনারদের প্রতি মহাদেব বলেছিলেন, "হে দেবর্ষি ব্রহ্মা প্রমুখ মহান সত্তমগনের নিত্য মহারাধ্যা যিনি, দেবতাগন দূর থেকে যাঁর সেবা করতে ইচ্ছা করেন,সেই শ্রী শ্রীরাধিকা দেবীকে সতত ভজনা করা উচিত । এই রাধানাম যে ব্যাক্তি শ্রীকৃষ্ণনামের সঙ্গে কীর্তন করেন, তার মাহাত্ম্য আমি কীর্ত্তন করতে সক্ষম নই, এমন কি শ্রী অনন্তদেবও নন ।"

আরো জানুনঃ রাধাষ্টমী কেন পালন করা হয় ?


প্রপঞ্চ লীলায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অন্তরঙ্গা স্বরূপশক্তি গোলোকেশ্বরী রাধারাণী, ভাদ্র মাসে শুক্লা অষ্টমী তিথিতে অনুরাধা নক্ষত্রে মধ্যাহ্ন কালে ব্রজমণ্ডলে শ্রীগোকুলের নাতিদূরে রাভেল নামক গ্রামে শ্রীবৃষভানু রাজা ও কীর্তিদা মায়ের ভবনে সকলের হৃদয়ে আনন্দ দান করে আবির্ভূত হন । শ্রী রাধারাণী প্রাননাথ স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্যাতীত এই রাধাষ্টমী তিথীর সম্যক মাহাত্ম্য কেউই বনর্ণা করতে পারেনা ।

শ্রী পদ্মপুরাণে (ব্রহ্মখণ্ড ৭/৮) বলা হয়েছে,
"একাদশ্যাঃ সহস্রেন যং ফলং লভতে নরঃ।
রাধা জন্মাষ্টমী পুণ্যং তস্মাং শত গুণাধিকম্।।"

রাধাষ্টমীর মাহাত্ম্য

১। একহাজার একাদশী ব্রত পালন করলে যে ফল লাভ হয়, শ্রীরাধাষ্টমী ব্রত পালন করলে তার চেয়ে শতগুন অধিক ফল লাভ হয়ে থাকে ।

২। কোটি জন্মের অর্জিত পাপরাশি ভক্তিপূর্ণ রাধাষ্টমী ব্রত ফলে বিনষ্ট হয় ।

৩। সুমেরু পর্বত প্রমান সোনা দান করলে যে ফল লাভ হয় একটি মাত্র রাধাষ্টমী ব্রত উৎযাপন করে তার শতগুন অধিক ফল লাভ হয় ।

এখানে ঃ রাধাষ্টমী পারন মন্ত্র

পদ্মপুরাণে আরো বলা হয়েছে,

"রাধাষ্টমী ব্রতং তাত যো ন কুর্য্যাচ্চ মূঢ়ধী।
নরকান্ নিষ্কৃতি নাস্তি কোটিকল্প শতৈরপি।।"

অর্থাৎ, যে মূঢ় মানুষ রাধাষ্টমী ব্রত করে না, সে শতকোটি কল্পেও নরক থেকে নিস্তার পেতে পারেনা ।

"স্ত্রীয়শ্চ যা না কৃবন্তি ব্রতমেতদ্ সুভপ্রদম।
রাধাকৃষ্ণপ্রীতিকরং সর্বপাপপ্রনাশম্।।
অন্তে যমপুরীং গত্বা পতন্তি নরকে চিরম্।
কদাচিদ্ জন্মচাসাদা পৃথিব্যাং বিধবা ধ্রুবম্।।"

অর্থাৎ, যে নারী শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণের প্রীতিকর সর্ব পাপ নাশক এই শুভপ্রদ মহাব্রত পালন করে না, সে জীবনের অন্তকালে নরকে গিয়ে চিরকাল সেখানে যাতনা ভোগ করে । পৃথিবীতে থাকা কালীনও সে দুর্ভাগিনী হয় । এই মহাব্রত উৎযাপন করলে শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণের অভয় পাদপদ্মে অচলা ও অব্যভিচারিনী ভক্তি লাভ হয়ে থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top